গাজী মো.গিয়াস উদ্দিন, ঝালকাঠি ॥ ঝালকাঠির রাজাপুরে পিটিয়ে ও আয়রণের স্যাঁকা দিয়ে নির্যাতনের পর রুনা লায়লা (২৮) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার ঘটনায় স্বামী ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না বলে নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করেছেন। ইউপি সদস্য আব্দুল কুদ্দুসকে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে রবিবার দুপুরে ঝালকাঠি শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়েছে। স্থানীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহর ঘুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় মানববন্ধন। এতে নিহতের বাবা আমির হোসেন গাজী, মা কুলসুম বেগম, ভাই গাজী রেজাউল করিম, মামা আবদুস ছত্তার ও চাচা মো. মিঠুনসহ পরিবার ও এলাকাবাসী অংশ নেয়। ডিসি অফিসের সামনের বিক্ষভে শেষ দিকে পুলিশ গিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে বিক্ষুব্দরা প্রেস ক্লাবের সামনে এসে বিক্ষোভ করে।
গত ২১ মে বিকালে রাজাপুর উপজেলার শুক্তাগড় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের বাড়ি থেকে তাঁর স্ত্রী রুনা লায়লার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রুনা লায়লা উপজেলার ডহরশংকর গ্রামের আমির হোসেন গাজীর মেয়ে। এ ঘটনায় পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করছে না বলেও অভিযোগ কজরেন স্বজনরা। তাঁরা মামলাটি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তদন্তেদের দাবি জানান। তবে পুলিশ বলছে, আসামি পলাতক থাকায় তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযুক্ত ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদ হোসেন। নিহত গৃহবধূর বাবা আমির হোসেন গাজী অভিযোগ করেন, তাঁর ছোট মেয়ে রুনা লায়লার দশ বছর আগে বিয়ে হয় একই উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের মজিবর হাওলাদারের ছেলে আব্দুল কুদ্দুসের সাথে। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। তার মেয়ে জামাই কুদ্দুস মেম্বর নির্বাচন করার সময় শ্যালকের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নেয়। সেই টাকা পরিশোধ না করে সম্প্রতি আবারো দুইলাখ টাকা দাবি করে সে। টাকা না দেওয়ায় রুনা লায়লাকে নির্যাতনের পরে হত্যা করে কুদ্দুস। রুনা লায়লার শরীরে লাঠি দিয়ে পেটানো ও আয়রণ দিয়ে স্যাঁকা দেওয়ার চিহ্ন রয়েছে। পরে আতœহত্যা বলে প্রচারণা চালায় ইউপি সদস্য কৃদ্দুস। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর ভাই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে রাজাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহতের চাচা মো. মিঠুন বলেন, পুলিশ আসামি গ্রেপ্তারে কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। আসামি আব্দুল কুদ্দুস তাঁর আতœীয় স্বজনদের বাড়িতে আছে। পুলিশ এ খবর জানলেও তাকে গ্রেফতার করছে না। মামলাটি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার পায়তারা করা হচ্ছে। তাই আমরা এই মামলাটি গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইডি) মাধ্যমে তদন্তের দাবি জানাই।
Leave a Reply